‘আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন’ চিঠি লিখে গৃহবধূর আত্মহত্যা


দৈনিক আলোড়ন
‘আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন’ চিঠি লিখে গৃহবধূর আত্মহত্যা

বিয়ের মাত্র ৩ মাস। এখনো মুছেনি হাতের মেহেদির রং। হঠাৎ ক্যান্সারে আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হয়ে দরিদ্র মা-বাবার কষ্ট বাড়াতে চাননি। হতে চাননি পরিবারের বোঝা। বাবার কাছে চিঠি লিখে নিজের বাড়িতে ফ্যানে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন গৃহবধূ সুমাইয়া আক্তার (২২)। জেলার বুড়িচং উপজেলার ডুবাইরচর গ্রামে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের ডুবাইরচর গ্রামে তাদের বসবাস। এ গ্রামের আবুল হাশেমের কন্যা সুমাইয়া। তিন মাস আগে পরিবারের সম্মতিতে ঢাকার সবুজবাগ থানার নাছির উদ্দিনের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর সংসারে কাটে প্রায় আড়াই মাসেরও বেশি সময়।

গত ১০-১২ দিন আগে পৈতৃক বাড়িতে আসেন তিনি। এ সময় শারীরিকভাবে অসুস্থ হলে কুমিল্লায় চিকিৎসকের কাছে এসে পরীক্ষার পর জানতে পারেন মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত। এরপরই সে রিপোর্টগুলো ছিঁড়ে ফেলে দেয়।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত মা সানু বেগমের সাথে পারিবারিক কাজ করে বিশ্রামের কথা বলে একটি কক্ষের ফ্যানের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। দুপুর আনুমানিক ২টায় তার ছোট বোন কক্ষে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় সুমাইয়াকে দেখে পরিবারের সদস্যদের জানালে তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন।

বুড়িচং থানার দেবপুর ফাঁড়ির এসআই রুহুল আমিন এসে লাশ উদ্ধার করেন। লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশ্যে সুমাইয়ার লেখা চিরকুট উদ্ধার করেছে।

চিঠিতে তার ক্যান্সারে আক্রান্তের খবরসহ বাবা-মার কাছে এই ব্যয়বহুল চিকিৎসার টাকা স্বল্পতার কথাসহ মাকে লেখা ছিল- তার শাশুড়ির দেওয়া জিনিসপত্র ফিরিয়ে দিতে, তার নিজের জিনিসপত্রগুলো চেয়ে নিতে, ভাই সায়মন ও বোন জান্নাতকে বলেছে- মায়ের সাথে জোরগলায় কথা না বলতে আর বাবাকে লিখেছে- আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না।