কুড়িগ্রামে ‘ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ’ করায় সংঘর্ষ, আহত ১০


দৈনিক আলোড়ন
কুড়িগ্রামে ‘ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ’ করায় সংঘর্ষ, আহত ১০

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ‘ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ’ করার জেরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অভিযুক্ত তরুণ ও ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবাসহ ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতরা ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের রাবাইটারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত রনি মিয়া (২০) দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার সময় ফুল ও চিঠি দিতেন এবং কুরুচিপূর্ণ কথা বলতেন। ওই ছাত্রী বিষয়টি বাবাকে জানায়। পরে কিশোরীর বাবা রনির বাবা মো. হাছেন আলীকে জানান। এতে রনি ক্ষিপ্ত হয়ে শনিবার বিকেলে কিশোরী প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পথে তার হাত জোরপূর্বক ধরে তাকে পাশের একটি বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সেই সময় কিশোরীর চিৎকারে তার চাচাতো ভাই সুবাশিষ চন্দ্র ঘটনাস্থলে এসে এর প্রতিবাদ করেন। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় তরুণ ও কিশোরীর বাবা, ভাই ও নিকট আত্মীয়সহ ১০ জন গুরুতর আহত হন।

কিশোরীর ভাই সুবাশিষ চন্দ্র সরকার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার বোনকে অভিযুক্ত রনি প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করে আসছিল। আমরা দুইদিন আগে তাকে শাসন করার জন্য তার বাবাকে বিচার দিয়েছিলাম। তার জেরে আজ সন্ধ্যার দিকে আমাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।

অভিযুক্ত রনি গুরুতর অসুস্থ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি। তবে রনির মা নাজমা বেগম মুঠোফোনে বলেন, আমার ছেলে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেবে। ওই মেয়ের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তারাই আজ বিকেলের দিক ফোনে ডেকে নিয়ে রড দিয়ে আমার ছেলের মাথায় মারে। সে এখন হাসপাতালে ভর্তি। আমরা বাধা দিতে গেছি, তখন আমাকেও মেরেছে। আমরা এর বিচার চাই।

ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলী শেখ বলেন, ঘটনাটি লোকমুখে শুনেছি। তবে যতদূর মনে হলো ছেলে-মেয়ে উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। আমি অসুস্থ, সকালে বিষয়টি দেখব।

ফুলবাড়ী উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনিল চন্দ্র বলেন, আসলে বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। ছেলে ও মেয়েটি দুই সম্প্রদায়ের। দুই পরিবারের মধ্যে এরকম সংঘর্ষের ঘটনা দুঃখজনক। দুটি আলাদা ধর্মের ছেলে-মেয়ের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি মেনে নেয়ার মতো না। আমরা বিষয়টি থানায় অবহিত করেছি।

এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জানা যায়, উভয় পরিবার থানায় মামলা করবে।