রাজধানীর খুচরা বাজারে কোনোভাবেই কাটছে না চিনির সংকট। এই সুযোগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটি বাড়তি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। দাম কমাতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা অকার্যকর।
কয়েক দফা মূল্য নির্ধারণ করলেও তা মানা হচ্ছে না। সর্বশেষ আমদানিতে পাঁচ শতাংশ শুল্ক কমানো হলেও বাজারে এর প্রভাব নেই। পাশাপাশি খুচরা বাজারে ছোলা, ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমলেও এখনো তা ক্রেতার নাগালের বাইরে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাওরান বাজার, নয়াবাজার ও মালিবাগ কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
সর্বশেষ জানুয়ারিতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১০৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, যা নির্ধারিত দামের চেয়ে ১৩ টাকা বেশি। রাজধানীর কাওরান বাজারের মুদি বিক্রেতা মো. সোহাগ বলেন, তিন মাস ধরে মিল থেকে পাইকারি বাজারে চিনির সরবরাহ নেই।
যে কারণে ডিলাররা খুচরা বাজারে চিনি সরবরাহ করছে না। চাহিদা দিলে ১৫-২০ দিন পর চিনি পাওয়া যাচ্ছে। তবে যে পরিমাণ চাহিদা দেওয়া হচ্ছে, সরবরাহ করা হচ্ছে তারও অর্ধেক। দামও বেশি। যতটুকু চিনি পাচ্ছি, তাই বিক্রি করছি। এমন অবস্থা চলতে থাকলে রোজায় চিনি নিয়ে ক্রেতার ভোগান্তি বাড়বে।
এদিকে রমজান সামনে রেখে চিনির বাজারে অস্থিরতা কমাতে জানুয়ারিতে শুল্ক কমানোর সুপারিশ করে এনবিআরকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপরই এনবিআর শুল্ক কমানোর উদ্যোগ নেয়। ২৬ জানুয়ারি এনবিআর এক প্রজ্ঞাপনে চিনি আমদানিতে শুল্ক ৩০ থেকে ২৫ শতাংশে নামিয়ে নেয়।
একই সঙ্গে প্রতি টন অপরিশোধিত চিনি আমদানিতে ৩ হাজার টাকা এবং পরিশোধিত চিনিতে ৬ হাজার টাকা আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে। এই সুবিধা ৩০ মে পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, হ্রাসকৃত শুল্কে চিনি এলে কেজিতে ৫ থেকে সাড়ে ৫ টাকা দাম কমতে পারে। এরপরও চিনির কেজি ১০০ টাকার ওপরে থাকবে।
দেশবন্ধু গ্রুপের প্রধান অপারেটিং অফিসার ইদ্রিসুর রহমান বলেন, মিল পর্যায়ে কেউ চিনি ধরে রাখেনি। কৃত্রিমভাবেও কেউ সংগ্রহ বা সংকট তৈরি করেনি। পাশাপাশি পাইপলাইনে চিনির কোনো স্টক নেই। নতুনভাবে আমদানিতে শুল্ক কমালে চিনি মিলে এলেই সরবরাহ বাড়বে। পাশাপাশি বাজারেও সরবরাহ ঠিক হবে। দামও কমতে পারে।
রাজধানীর খুচরা বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা কমেছে ছোলা, ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। এরপরও এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে উচ্চমূল্যে। বিক্রেতারা বলছেন, বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগেও ১০০ টাকা ছিল।
পাশাপাশি প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা, যা সাত দিন আগে ২৩০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৩০-৭৪০ টাকা, যা আগে ৭৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। প্রতি হালি (৪ পিস) ফার্মের ডিম বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা, যা আগে ৫০ টাকা ছিল।