পিরোজপুরের নাজিরপুরে নিখোঁজের চার মাস পর লামিয়া আক্তার (১৮) নামের এক তরুণীর কঙ্কাল উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। ঢিলের সঙ্গে পাওয়া চিরকুটের সূত্র ধরে কঙ্কালটি উদ্ধার করা হয়। ওই চিরকুটে লেখা ছিল-‘তোমার মাইয়ার লাশ বালুর মাঠে, সব জানে মেজো খালা।
সোমবার দুপুরে থানা পুলিশ ও ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন টিম একটি চিরকুটের ভিত্তিতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাতকাছিমা গ্রামের একটি বাড়ির বালুর ভেতর থেকে ওই কিশোরীর হাড় উদ্ধার করা হয়।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে,ওই তরুণী নিখোঁজের ঘটনায় গত ২৫ ডিসেম্বর তরুণীর মা রাজিয়া বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ওই তরুণীর স্বামী তরিকুল ইসলামকে (২২) প্রধান আসামি করে সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত দুইজনকে আসামি করা হয়।
নিহতের খালা সাবিনা ইয়াসমিন জানান, গত ৬ নভেম্বর তার বোনের মেয়ে লামিয়া আক্তার নিখোঁজ হয়। সে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চিথলিয়া গ্রামের দিনমজুর মো. নজরুল ইসলামের কন্যা।
নিখোঁজ ওই তরুণীর একই এলাকার মিজান খানের ছেলে তরিকুল ইসলামের সঙ্গে গত প্রায় ৮ মাস আগে প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে হয়। প্রায় ৮ বছর ধরে তাদের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। কিন্তু পরিবার ওই বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ওই দম্পতির মধ্যে প্রায়ই কলহ লেগে থাকত। গত ৫ মাস আগে ওই তরুণী নিখোঁজ হয়।
তিনি জানান,’রোববার রাতে তাদের ঘরের টিনের চালের উপর হঠাৎ করে কয়েকটি ইট নিক্ষেপের আওয়াজ পান তারা। পরে তারা ঘর থেকে বের হয়ে টর্চলাইটের মাধ্যমে তাদের জামাতা তরিকুলকে বাড়ির সামনের খালের অপরপাড়ের রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। আর ঘরের সামনের সিঁড়ির ওপর একটি চিঠি পাওয়া যায়। ওই চিঠিতে লেখা- ‘তোমার মাইয়ার লাশ মোজাহার মোল্লার বাড়ি পশ্চিম পাশে বালুর মাঠে। ইতি-মুমিন। সব জানে মেজো খালা।
বিষয়টি ওই রাতে পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ওই রাতেই ঘটনাস্থল বালুর মাঠে আসেন। সেখানে তারা রাতভর পাহারা দিয়ে দুপুরে সেখানে খনন করেন।
এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির জানান, গত ২৫ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে নিখোঁজের অভিযোগ করা হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তখন দুইজনকে আটক করে। তবে তারা জামিনে রয়েছেন।
রোববার রাতে ওই পরিবারের পক্ষ থেকে একটি চিরকুট পাওয়ার তথ্য জানায়। আমরা ওই তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে ওই বালুর মাঠ খুঁড়ে সেখানে একটি কঙ্কাল পাওয়া গেছে। ওই কঙ্কালটি নিখোঁজ তরুণীর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে তার ডিএনএ টেস্ট করার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।