ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় কিশোরী ফাহিমা আক্তার (১৪) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ফাহিমাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে রাখেন আট সিরিয়াল রেপিস্ট।
ওই আটজন দিনে ইটভাটায় কাজ করতেন। আর রাতে ধর্ষণের মতো অপরাধ করতেন বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভূঞা।
গ্রেফতাররা হলেন ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে মো. শাহজাহান (২৬), হামেদ আলীর ছেলে শহিদ মিয়া (৩৮), আবু হনিফার ছেলে মাসুম বিল্লাহ ওরফে ফজর আলী (২২), আবুল কালামের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৪), আ. হাইয়ের ছেলে রাসেল মিয়া (১৯)। তারা প্রত্যেকে জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর ও পলাশপুর গ্রামের বাসিন্দা।
শনিবার (৪ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার।
নিহত ফাতেমা আক্তার ফুলবাড়িয়া উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হয়ে নিখোঁজ হয় ফাতেমা আক্তার। ওইদিন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ফাহিমার সন্ধান মেলেনি। পরদিন সকালে বাড়ি থেকে ২০০ গজ দূরে আমগাছে ফাহিমার ঝুলন্ত মরদেহ দেখেন স্থানীয়রা। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। মরদেহের যৌনাঙ্গ-পায়ুপথ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায় বলে সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি কিশোরীর মা হাসনা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৫-৬ জনকে আসামি করে ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা করেন। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দিনগত রাতে ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার মাসুম আহমেদ ভুঞা বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর থেকে আসামি শাহজাহান বাড়ির পাশে ওত পেতে ছিলেন। পরে ফাহিমা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হলে তাকে মুখ চেপে ধরে আখক্ষেতে নিয়ে আটজন মিলে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর প্রমাণ লোপাট করতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ আমগাছে ঝুলিয়ে রাখেন আসামিরা। শাহজাহান মিয়ার কাছ থেকে ফাহিমার মোবাইল ফোন জব্দ করেছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেফতার পাঁচজনের মধ্যে রাসেল মিয়া ও আলমগীর হোসেন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করেছেন। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অপর তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।