প্রাণ ফিরে পেল ভিক্টোরিয়া কলেজের পরিত্যক্ত মাঠ


দৈনিক আলোড়ন
প্রাণ ফিরে পেল ভিক্টোরিয়া কলেজের পরিত্যক্ত মাঠ

ভিক্টোরিয়া কলেজের বিশাল খেলার মাঠ ছিল বর্জ্য, পানি, কচুরিপানা, কচু গাছ ও লম্বা লম্বা ঘাসে ঠাসা। অতিরিক্ত বৃষ্টি ও বর্ষাতে ছিল ক্যাম্পাস জুড়ে বিষাক্ত সাপের আনাগোনা। বৃহৎ মাঠ আবর্জনার স্তুপে পরিণত হওয়ায় বৃদ্ধি পেয়েছিলো মশার উপদ্রব ও প্রজনন। খেলার মাঠ ছিল কিন্তু খেলাধুলার জন্য ছিল অনুপযোগী।

বিগত সময়ে কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষগণ ভরাটের কথা শুনালেও শিক্ষার্থীদের মনে আশার প্রদীপ ছড়াতে পারেনি কেউই। যার ফলে খেলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল দেশসেরা এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। অনার্স শাখার শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার তেমন কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছর আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টও হতো কলেজের বাহিরের ভিন্ন কোনো মাঠে। যার কারনে মাঠের আক্ষেপ ছিল সকল শিক্ষার্থীর মাঝে।

নতুন করে মাঠ ভরাট ও সংস্কারের ফলে বদলে গেছে পুরো ক্যাম্পাসের চিত্র। পরিত্যক্ত মাঠে ফিরে এসেছে সজীবতা। মাঠের সংস্কারের কাজ প্রায় শেষ। পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর মাঠটি উন্মুক্ত করে দিবে কলেজ প্রশাসন। যে মাঠ ছিল পরিত্যক্ত, প্রতি বছর সে মাঠেই হবে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সংস্কারের ফলে পরিবর্তন এসেছে আশপাশের পরিবেশেরও।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী কাজী মু. মাঈন উদ্দিন বলেন, আমাদের বিভিন্ন খেলাধুলা কিংবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য এই মাঠটি খুব দরকার ছিল। মাঠ তৈরির ফলে কলেজের সৌন্দর্য অনেকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ দেখলাম মাঠের কাজ প্রায় শেষ। আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে আমরা মাঠে খেলতে পারবো। মাঠের দক্ষিণ দিকে গাছ রোপন করলে আরো সুন্দর লাগবে।

ইংরেজি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মু. তারেক বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি ১ম বর্ষে যখন ক্লাস করা শুরু করি তখন থেকেই আমার মনে খুব ইচ্ছে ছিল যদি আমাদের মাঠ পুরাপুরি ভরাট করা হত এবং মাঠের দক্ষিণ পাশে আরো একাডেমিক ভবন হত তাহলে দেখতে কতই না সুন্দর হতো। এবং লেকের চুতূর্দিকে যদি ওয়াকওয়ে সাথে বসার জন্য সিট থাকতো তাহলে কত সুন্দর লাগতো এটা নিয়ে আমি ২০২০ সালে ভিক্টোরিয়া কলেজ গ্রুপেও একটা পোস্ট করেছিলাম।

আমার চিন্তাগুলো আজ বাস্তবায়ন হচ্ছে এতে অত্যন্ত আনন্দিত এবং উদ্বেলিত। সবগুলো কাজ সম্পন্ন হলে এটা কলেজ থাকবে না একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মত লাগবে।

ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মু. মেহেদী হাসান অপু বলেন, আজ বিকেলে ক্যাম্পাসে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতে গিয়ে মাঠটি দেখে আসলাম অনেক ভালো লেগেছে। মাঠ সংস্কার হওয়ায় ক্যাম্পাসটি এখন অনেক সুন্দর লাগে। মাঠটি উন্মুক্ত করে দিলে আমার মতো খেলাপ্রেমী যারা আছে তাদের জন্য অনেক ভালো একটা পরিবেশ তৈরি হবে।

ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান দৈনিক আমাদের কুমিল্লা পত্রিকার প্রতিবেদকে জানান, খেলার মাঠের ৮০% কাজ শেষ। প্রায় ৫ একর জায়গা ভরাট হয়েছে। ঈদের পর মাঠ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেবো। খুব জেদ ছিল। বলেছি মাঠ ভরাট করবই। ভিক্টোরিয়া কলেজের মাঠ করতেই হবে। মাঠে পানি উঠতে দেবো না। প্রয়োজনে পানি নিষ্কাশনের জন্য মোটরের ব্যবস্থা করবো।

মাঠ সংস্কারের ফলে শিক্ষার্থীদের শারীরিক এবং মানুষিক সুস্থতা ও প্রশান্তির উন্নতি ঘটবে। কলেজের মধ্যে খেলাধুলার পরিবেশ তৈরি হবে এমনটাই প্রত্যাশা।