রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের পর দুই মাঝিকে হত্যা


দৈনিক আলোড়ন
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের পর দুই মাঝিকে হত্যা

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩০ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই রোহিঙ্গা নেতাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার সকালে ও সোমবার রাতে পৃথক এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

বুধবার খুন হওয়া রোহিঙ্গা নেতা সৈয়দ হোসেন ওরফে কালা বদা (৩৭) কুতুপালং ২ নম্বর ক্যাম্পের হেড মাঝি (নেতা) ছিলেন। আর সোমবার রাতে খুন হওয়া নূর হাবি ওরফে ওয়াক্কাস রফিক (৪০) বালুখালী ৯নং ক্যাম্পের নেতা (মাঝি) ছিলেন।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, কুতুপালং ২ নম্বর ক্যাম্পে বুধবার সকাল ৮টার দিকে রোহিঙ্গা নেতা সৈয়দ হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

একদল মুখোশধারী বাড়ির সামনে দাঁড়ানো সৈয়দ হোসেনকে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ হোসেনকে ক্যাম্পের এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোহিঙ্গা নেতারা জানান, হেড মাঝি হিসাবে ক্যাম্পে আরসার বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার ছিলেন সৈয়দ হোসেন। এ কারণে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা তাদের।

অপরদিকে, বালুখালী ৯ নম্বর ক্যাম্পে সোমবার রাত ১টার দিকে ব্লক-সি/৩ এর মৌলভী ইয়াছিনের শেডের সামনে গুলি করে রোহিঙ্গা নেতা নূর হাবি ওরফে ওয়াক্কাসকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরিবারের সদস্যরা জানান, ২৫-৩০ জনের একটি মুখোশধারী দুর্বৃত্তের দল ওয়াক্কাসকে গুলি করে ও কুপিয়ে পালিয়ে যায়।

তাকে উদ্ধার করে আইওএম পরিচালিত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার বালুখালী ৯ নম্বর ক্যাম্পের মাঝি ওয়াক্কাসকে হত্যার ৩০ ঘণ্টার মাথায় সৈয়দ হোসেন হত্যার ঘটনা ঘটে। ক্যাম্পগুলোতে একের পর এক হত্যাকাণ্ডে সাধারণ রোহিঙ্গারা ভীতির মধ্যে রয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক রোহিঙ্গা জানান, ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে আরসা সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে মাঝিসহ শান্তিপ্রিয় রোহিঙ্গারা।

এখন প্রতিবাদকারীদের টার্গেট করে হত্যা করছে আরসা সদস্যরা। ওয়াক্কাস নিহতের পর অন্য প্রতিবাদকারীরা টার্গেটে রয়েছে চিন্তা করে আতঙ্কে রয়েছেন তারা। ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি সৈয়দ হারুন উর রশিদ জানান, বুধবার সকালে কুতুপালং ক্যাম্প-২ ইস্টে গুলির ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে যায়। দুর্বৃত্তদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।