আর্জেন্টিনার খেলা দেখতে গিয়ে চাকরি হারালেন তরুণী


দৈনিক আলোড়ন
আর্জেন্টিনার খেলা দেখতে গিয়ে চাকরি হারালেন তরুণী

সবশেষ কাতার বিশ্বকাপে লিওনেল মেসির নেতৃত্বে শিরোপা জিতে নেয় আর্জেন্টিনা। শুক্রবার বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনার সঙ্গে প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয় পানামা।

আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সের মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে পানামাকে ২-০ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা।

লিওনেল মেসিদের সেই ম্যাচটি দেখতে গিয়ে চাকরি হারালেন ২১ বছর বয়সী হুইলেন বারবিয়েরি নামে এক তরুণী।

আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ‘ক্লারিন’ জানিয়েছে, সান্তা ফে শহরের পৌরসভার অন্তর্গত ইভা পেরন হেলথ সেন্টারে কাজ করতেন হুইলেন বারবিয়েরি। অসুস্থতার ভুয়া কাগজ দেখিয়ে ছুটি নিয়ে মেসিদের খেলা দেখতে গিয়েছিলেন তিনি।

স্টেডিয়ামে গিয়ে টিওয়াইসি স্পোর্টসের সঙ্গে কথা বলার সময় অসুস্থতার মিথ্যা অজুহাত দেখানোর কথা জানিয়ে দেন বারবিয়েরি। বিষয়টি তার বস জানতে পেরে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেন।

পানামার বিপক্ষে ম্যাচের দিন বারবিয়েরি অফিসে যাননি। বেলা সাড়ে তিনটা নাগাদ তাকে মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে টিওয়াইসি স্পোর্টসের অনুষ্ঠানে দেখা যায়। তার কাজে জানতে চাওয়া হয় খেলা দেখতে আসার জন্য কী ফেলে রেখে এসেছেন? হুইলেন বারবিয়েরি কোনো রাখঢাক না রেখেই স্প্যানিশ ভাষায় বলেন, ‘লাবুরো।’ বাংলায় এর অর্থ হলো ‘কাজ’।

বারবিয়েরি বলেন, রোলিকে (রোলি সান্তাক্রোচ্চে, তিনি সান্তা ফে শহরের মেয়র) শুভেচ্ছা। তিনি আমার বস। হয়তো এখন আমাকে টিভিতে দেখছেন। একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট তিনি পেয়েছেন। কিন্তু আমি ভালো আছি। ডায়রিয়া হয়েছিল কিন্তু নিশ্চিত থাকুন এটা ঠিক হয়ে যাবে।

সেই সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে বারবিয়েরির আরও বলেন, জাদুবলে আমি বন্ধুদের নিয়ে মনুমেন্তালে উপস্থিত হতে পেরেছি। রোলি, শপথ করে বলছি, দ্বিগুণ কাজ করে দেব। শুধু আমাকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলের খেলা উপভোগ করতে দাও।

সঞ্চালক জানতে চান, যদি চাকরি চলে যায় তাহলে! বারবিয়েরি জবাবে বলেন, সেটা কাল দেখা যাবে। আজ তো আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন!

আর্জেন্টিনার রেডিও অনুষ্ঠান ‘তোদোস এন লা ওচো’য় হাজির হয়ে বারবিয়েরিকে চাকরি থেকে ছাঁটাই করা প্রসঙ্গে সান্তা ফে শহরের মেয়র রোলি সান্তাক্রোচ্চে বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে সে এখন আর পৌরসভার অধীনে কাজ করে না। কী ঘটেছে তা জানার পর দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে আমাদের সঙ্গে আর কাজ করবে না, এটা কষ্টের। সে আমার ব্যক্তিগত সচিবের বোন।

তিনি আরও বলেন, সে করোনা মহামারির সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছে। আমার অধীনেই পৌরসভায় ঢুকেছিল। আসলে ওদের প্রজন্মকে বোঝা খুব কঠিন। আমারও খারাপ লাগছে। কিন্তু সে এমন ভুল করেছে যে জন্য তাকে খেসারত দিতেই হবে।

বারবিয়েরি পরে ইনস্টাগ্রামে ক্ষমা চেয়েছেন মেয়রের কাছে, ফুনেসের (সান্তা ফে) মেয়রের কাছে ক্ষমা চাইছি। ক্যামেরার সামনে মজা করেছিলাম। বুঝতে পারিনি ঘটনা এত দূর গড়াবে। আমি বিতর্ক তৈরি করতে চাই না। আমি জানি, এই বাজারে চাকরি পাওয়া কত কঠিন!