সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও খুবই অনাড়ম্বর জীবনযাপন করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে একটা শার্ট-প্যান্ট পরেছেন। আর পায়ে দিতেন ২০০ টাকার প্লাস্টিকের স্যান্ডেল।
তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘দেশের মানুষ পেট ভরে খেতে পায় না, সবাই জামা-কাপড় পরতে পারে না। আমরা তো মুক্তিযুদ্ধ করেছি মানুষের খাওয়া-পরার সমস্যা না থাকার জন্য। এখানে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। তাই আমাকে বিলাসিতা মানায় না।’
এক সাক্ষাৎকারে ডা. জাফরুল্লাহকে জিজ্ঞেস করা হয়, আপনার জন্ম খুবই সমৃদ্ধ ও বনেদি পরিবারে জন্ম। আপনি এত সহজ-সরল জীবনযাপন করেন কেন? যদি বলি আপনার প্যান্টের কথা, আপনার প্যান্টে দেখেন ছেঁড়া একটা দাগ আছে।’
উত্তরে চায়ের কাপ হাতে থাকা জাফরুল্লাহ চৌধুরী হেসে বলেছিলেন, ‘পুরা প্যান্ট ছিঁড়ে নাই, আমি কী করব?’ এই প্যান্টটা ফেলে দেব? যে দেশের মানুষ খালি পায়ে চলত, আমি তো একাত্তর সনে দেখেছি…এই আমার শার্টের বয়স প্রায় ৩০ বছর। এখন এই শার্ট যদি না ছিঁড়ে আমি কি ছিঁড়ে ফেলব?’
এরপর প্রশ্নকর্তা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতার উদ্দেশে বলেন, ‘স্যার, আপনি একটা মার্ভেলাস গাড়িতে চলতে পারেন। বিএমডব্লিউ আপনার পক্ষে সম্ভব। আপনি একদম স্বাভাবিক, ছোটখাটো একটা ভাঙাচোরা গাড়িতে চড়েন।’
জবাবে গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি বলেছিলেন, ‘…আমি সব রকম লাক্সারি করেছি। আমি যখন বিলেতে (লন্ডন) ছিলাম, আমার প্রাইভেট পাইলটসের লাইসেন্স ছিল। প্লেন চালানোর লাইসেন্স ছিল আমার।
তিনি বলেন, ‘প্রিন্স চার্লসের স্যুট বানাত যে দর্জি, সে দর্জি আমার স্যুটও বানাত। আমি কখনও স্যুট বানানোর জন্য দোকনে যায়নি। সে দরজায় এসেছে, আমার মাপ নিয়ে গেছে। লন্ডনের খুবই দামি এলাকায় থাকতাম। এসব এখন যখন আমি দেখি, তখন মনে হয় ওটা একটা ছেলেমানুষি ছিল। হোয়াট অ্যা ওয়েস্ট অফ মানি (অর্থের কী অপচয়)! এই টাকা দিয়ে আমি কতজনের উপকার করতে পারতাম!’