পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে গতকাল (মঙ্গলবার) একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় কেঁপে উঠে আশেপাশের কয়েকটি ভবনও। হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরিত হয়ে ভবনের জানালার কাঁচ, সাইনবোর্ড ছিটকে পড়ে রাস্তার ওপর। এ ঘটনায় বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে। আহত দুই শতাধিক। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা সংকটাপন্ন।
সিদ্দিকবাজারের নর্থসাউথ রোডের ১৮৪ নম্বর ভবনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলের পাশের আয়েশা মার্কেটের দোকান মালিক জমির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ভবনটিতে স্যানিটারি মার্কেট ও গোডাউন এবং আবাসিক বাসা ছিল। বিস্ফোরণের শব্দ শোনে আমরা দৌড়ে দোকান থেকে বেরিয়ে এসে দেখি এলাকা ধোয়াচ্ছন্ন হয়ে গেছে। চারদিক থেকে আহতদের আর্তনাদ শুনে আমরা দৌড়ে যাই। এমন বিস্ফোরণ জীবনে কখনোই দেখিনি।
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সাজেদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, নর্থসাউথ রোডের পাশে ক্যাফে কুইন স্যানেটারি মার্কেটে অন্তত আটটি দোকান ছিল। ধসে পড়ার সময় ভেতরে অনেকে আটকে গেছেন। ওই সময় পাশের ফাতেমা মার্কেট ও ব্যাংক ভবনের দেয়ালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই মার্কেটের স্যানিটারির মালিক মমিনউদ্দিন সুমনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।
মার্কেটের মালিক সমিতির সভাপতি বাদশা মিয়ার বরাতে মামুন নামের একজন যুগান্তরকে বলেন, ধসে পড়া সাততলা ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডের নিচে স্যানিটারি পণ্য সামগ্রীর দোকান, উপরে প্লাস্টিকের ট্যাংকির গোডাউন এবং একটিতে ব্যাংকের অফিস ও আবাসিক বাসা রয়েছে।
তিনি বলেন, অন্যান্য দিনের মতো বেচাকেনা চলছে। আমি অন্য কাজে দোকানের বাইরে যাই। কিছুক্ষণ পরে শুনতে পাই, ভবন বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে ধসে পড়েছে। কী করব বুঝে উঠতে না পেরে দোকানের দিকে এসে দেখি আমার সব শেষ। ঘটনার সময় ভবনটির ভেতরে কয়েকশ মানুষ অবস্থান করছিলেন। দিনের ব্যাংকিং লেনদেন শেষ হওয়ার কারণে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকের ভিড় কম থাকায় হতাহতের সংখ্যা কিছুটা কম হয়েছে।
জানা গেছে, ভবনটির মালিক প্রয়াত আহমেদ রেজার ছেলে ওয়াহিদ রেজা। ভবনটির ছয় ও সাততলায় তারা নিজেরা থাকেন। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।