গত ২০ ফেব্রুয়ারি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দির টেকনিক্যাল রোডের পার্শ্ববর্তী সুরমা নদীর পাড় থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাজ্জাদ আলী (৩৫) নামে এক যুবকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলী বাদী হয়ে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে পুলিশ বলছে, মামলার বাদী জাহাঙ্গীরই তার বড় ভাইয়ের হত্যাকারী। সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে বড় ভাই সাজ্জাদকে হত্যা করেন তিনি।
আজ বুধবার সংবাদ সম্মেলনে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) এসব তথ্য জানায়।
সাজ্জাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছোট ভাই জাহাঙ্গীর আলী, বড় ভাই সিরাজ আলী ও লক্ষ্মীপুর সদর থানার রাজাপুর গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে সাহাজানকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে গ্রেপ্তারের পর সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে বড় ভাইকে হত্যার কথা জাহাঙ্গীর স্বীকার করেছেন বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নিহত সাজ্জাদ জালালাবাদ থানার বসন্তরগাঁওয়ের মৃত সোয়াব আলীর ছেলে। অজ্ঞাত হিসেবে লাশ উদ্ধার করা হলেও দু’দিন পর তার পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। লাশ শনাক্তের পর সাজ্জাদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি তার ছোট ভাই জাহাঙ্গীর অজ্ঞাতদের আসামি করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) সোহেল রেজা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, লাশ উদ্ধারের পর পরিচয় জানতে পেরে পুলিশ বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত নিয়ে অভিযানে নামে। পরে হত্যার নেপথ্যে জাহাঙ্গীর আলীর জড়িত থাকার তথ্য পায় পুলিশ। প্রথমে সাহাজানকে এবং পরে জাহাঙ্গীর ও তাই ভাই সিরাজ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গতকাল মঙ্গলবার জাহাঙ্গীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি জানান, বড় ভাই সিরাজ আলী হত্যায় সহায়তা করেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ভাইদের মধ্যে বিরোধ থেকে সাজ্জাদ আলীকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা, বস্তা ও দড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সাজ্জাদকে হত্যা করা হয়। এরপর তার লাশ গুমের পরিকল্পনা করতে একদিন চলে চলে যায়। ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে সুরমার পাড়ে বস্তাবন্দি করে তার লাশ ফেলে দেওয়া হয়। এর আগে একটি অটোরিকশাযোগে সাজ্জাদের লাশ বাড়ি থেকে সুরমার পাড়ে নিয়ে আসা হয়। এরপর গাড়িচালককে কৌশলে সরিয়ে জাহাঙ্গীর লাশটি নদীতে ফেলে দেন।