ঢাবির বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোটের অভিযোগ


Apurbo Ahmed Jewel
ঢাবির বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোটের অভিযোগ

সকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হলেও শেষমুহূর্তে এসে জাল ভোটের উৎসবে মেতে ওঠে নৌকার সমর্থকরা। জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢাকা-৮ আসনের উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শেখ রাসেল ল্যবরেটরি স্কুল, সায়েন্স এনেক্স ভবন, কার্জন হলসহ কয়েকটি কেন্দ্র রয়েছে। রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এসব কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সব কেন্দ্রে মোটামুটি সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে ভোটার উপস্থিতি ছিল একেবারেই নগণ্য।

 

তবে বিকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পালটে যেতে থাকে চিত্র। ভোটগ্রহণের শেষ মুহূর্তে ভুয়া ভোটারের দৌড়ঝাঁপ বেড়ে যায়। ৩টার দিকে ঢাবির কার্জন হল কেন্দ্রে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। কথা বলে জানা যায়, তারা কেউ এই কেন্দ্র এমনকি এই এলাকার ভোটার নয়। প্রশ্নোত্তরের একপর্যায়ে তারা সবাই দৌড়ে পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর সাংবাদিকরা বের হয়ে গেলে পুনরায় নৌকার সমর্থকরা কেন্দ্রে ঢুকে ভোট দিতে থাকে। দায়িত্বরত সাংবাদিকরা এসব নিয়ে কথা বললেও কর্মকর্তা, কর্মচারীদের দেখা গেছে নিষ্প্রভ থাকতে। কার্জন হলের জাল ভোটের ঘটনা ওই কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রিসাইডিং অফিসারের সামনেই হওয়ায় এ ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করলে তিনি এই প্রতিবদেককে বলেন, দেখছেনই তো, কি আর করব ভাই? আমার কিছুই করার নাই।

একই চিত্র ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রেও। জানা যায়, একটি বুথে হঠাৎ কয়েক যুবক এসে লাইনে দাঁড়ালে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করায় উত্তর দিতে না পেরে একজন পালিয়ে যায়। তার পালিয়ে যাওয়ার চিত্র দেখে আরও কয়েকজন ভোট না দিয়ে চলে যায়। তবে দায়িত্বরত কর্মকর্তা কিংবা পুলিশ কাউকেই তাদের বাধা দিতে দেখা যায়নি। এছাড়া উদয়ন স্কুলেও তিনটার দিকে প্রায় শতাধিক যুবক লাইনে দাঁড়ায়। এ সময় সাংবাদিকরা তথ্য জানতে চাইলে একটু পর সব চলে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেয়। পরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য খবর পেয়ে সেখানে এলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এসব কেন্দ্রে ভোট শেষ হওয়ার একঘণ্টা আগের ‘কাস্ট’ হওয়া ভোটের সংখ্যা এবং ভোট শেষে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের ঘোষণা করা ভোটের সংখ্যায়ও রয়েছে ব্যাপক তারতম্য। বিকাল ৩টার সায়েন্স এনেক্স কেন্দ্রে কাস্ট হওয়া ভোটের সংখ্যা ছিল ৩৭১, কিন্তু আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পর দেখা যায় এখানে মোট ভোট কাস্ট হয়েছে ৫২১টি। অথচ ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানান, শেষ এক ঘণ্টায় সায়েন্স এনেক্স কেন্দ্রে সর্বমোট ৩০ ভোটারও প্রবেশ করেননি। একইচিত্র ঢাবির অন্য কেন্দ্রগুলোতে। এ ছাড়াও নৌকা ছাড়া আর কোনো প্রার্থীর এজেন্ট ছিল না ঢাবির কেন্দ্রগুলোতে। দুয়েকটি কেন্দ্রে লাঙ্গলের প্রার্থী থাকলেও অভিযোগ আছে, তারাও নৌকারই সমর্থক।