বয়লার মুরগির দাম ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি দরে


দৈনিক আলোড়ন
বয়লার মুরগির দাম ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি দরে

খুচরা বাজারে ২৬০ টাকা কেজি দরে বয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। আজ শুক্রবার (২৪ মার্চ) একই মুরগির দাম কমে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি দরে। দিনের ব্যবধানে সোনালি মুরগির দাম না কমলেও কমেছে দেশি মুরগির। গতকাল ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া দেশি মুরগি আজ বিক্রি হয়েছে ৬৮০ টাকায়।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি বাজারের মুরগির দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, রোজার সময় হলেও বিক্রি একেবারেই কম। এর কারণ হিসেবেও ব্যবসায়ীরা বেশি দামের কথা বলছেন। আর ক্রেতারা বলছেন, মুরগির বাজারে আগুন। যে ধরনের মুরগিই তারা কিনতে যান না কেন, দাম বেশি।

চলতি বছরের মধ্য জানুয়ারিতে বয়লার মুরগির দাম ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে একই মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি শুরু করে ব্যবসায়ীরা। এরপর পর্যায়ক্রমে বাড়তে বাড়তে এ দাম গিয়ে ঠেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু, প্রথম রোজার দিনে কেজিপ্রতি ২০ টাকা করে কমেছে ব্রয়লারের।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ব্রয়লার কিনতে আসা মো. শাহবুদ্দিন বলেন, ‘২০ টাকা কমিয়ে কী এমন লাভ হলো? দুই মাস আগে এই মুরগির দামই তো ছিল ১৫০ টাকা। ১০০ টাকা বাড়িয়ে ২০ টাকা কমালে আমার কত লাভ হলো?’

এদিকে, রোজায় মানুষকে স্বস্তি দিতে ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করেছে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের চারটি বড় কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে দাম নির্ধারণ করা হয়। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘কোম্পানিভেদে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে, যা ভোক্তা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২২০ টাকার বেশি হবে না।’

পোলট্রি খাতের শীর্ষস্থানীয় চার প্রতিষ্ঠান খামার পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা কেজি নির্ধারণের পরেই বাজারে আজ এমন নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেল।

কারওয়ান বাজারের ভাই বন্ধু দেশি মুরগির আড়তের মালিক মো. সোহেল বলেন, ‘গতকাল ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। আজ বিক্রি করছি ১৪০ টাকা কেজি দরে। তবে, দুঃখের কথা হচ্ছে, রোজার প্রথম দিনের সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মাত্র ২০টি মুরগিও বিক্রি করিনি। বেচা-কেনা ভালো না। আর আমরা বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করলে কিছুই থাকে না। বিদ্যুৎ বিল, কমচারীর বিল; নিজের সংসার, সব মিলিয়ে কুলিয়ে উঠছি না।

মো. বেল্লাল হোসেন নামের আরেক দোকানি বলেন, ‘ব্রয়লার বিক্রি করছি ২৪০ থেকে ২৪৫ টাকা কেজি। আর দেশি মুরগির দামও ২০ টাকা কমেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিক্রি করেছি ৭০০ টাকা কেজি, আজ বিক্রি করছি ৬৮০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম কমেনি।”

আবু ইউসুফ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, ‘সকালে ভোক্তা অধিকারের ম্যাজিস্ট্রেট এসেছিলেন। তিনি বলে গেছেন, যে দামে কেনা তার থেকে ১০ টাকার বেশি লাভ করলে জরিমানা করবেন। কিন্তু, আমার দোকান ভাড়া, অন্যান্য খরচসহ কর্মচারীর বেতন ও নিজের পরিশ্রম হিসাব করলে ১০ টাকা লাভে বিক্রি করলে আমার লোকসান হবে। আমার মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কথা কেউ ভাবেন না। যেখানে ধরা উচিত, সেখানে কেউ ধরে না।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ি, ডেমরা বাজারের ব্রয়লার বিক্রেতারা জানান, তারা যে মুরগি বিক্রি করছেন, তা আগের দামে কেনা। তারপরও পাইকারি বাজার কিছুটা কমায় কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমিয়ে বিক্রি করছেন তারা। তাদের দাবি, যারা আজ শুক্রবার সকালে কাপ্তান বাজার থেকে মাল এনেছেন, তারা কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি করতে পারছেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একটু দরদাম করে নিলে মুরগি বিক্রেতার চাওয়া দামের থেকে আরও ৫-১০ টাকা কমে কেনা যাচ্ছে।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ি ব্রয়লার মুরগি বিক্রেতা সালাম জানান, ফার্ম থেকে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় মুরগি বিক্রি হলে খুচরায় ২৩০ থেকে ২৪০ টাকায় কিনতে হবে ভোক্তাদের। পরিবহণ ও ঘাটতিসহ অন্যান্য খরচ মিলিয়ে বাজারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত দামের পার্থক্য থাকে।