ভবিষ্যত আন্দোলন নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডকে যে পরামর্শ দিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা


Apurbo Ahmed Jewel
ভবিষ্যত আন্দোলন নিয়ে বিএনপির হাইকমান্ডকে যে পরামর্শ দিলেন কেন্দ্রীয় নেতারা

২৮ অক্টোবরের পর দমন পীড়নের মুখে মাঠ থেকে সরে যাওয়া বিএনপি আবারও রাজপথে ফিরতে চায়। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফিরতে চায় ১৫ বছর ধরে সংগ্রাম করে আসা দলটি। এবার কোন কৌশলে আন্দোলন হবে সেটি নিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মত নিচ্ছে হাইকমান্ড। এরই অংশ হিসেবে বুধবার দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের সঙ্গে ভাচুয়ালি বৈঠক করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে আন্দোলন আবারও চাঙা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনের শুরুর দিন ৩০ জানুয়ারি অথবা এর আগে কর্মসূচি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

সেক্ষেত্রে ঢাকায় বড় ধরনের সমাবেশ করার প্রস্তাব দিয়ে নেতারা বুধবারের বৈঠকে বলেছেন, জনগণ ভোট বর্জন করে পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে, বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গে তারা রয়েছে। তাই সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরুর আগেই সমাবেশ করে জনগণকে বার্তা দেওয়া উচিত বড় দল হিসাবে বিএনপি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকবে। সমাবেশ করা হলে নেতাকর্মীরা আবারও উজ্জীবিত হবে। দেশের পাশাপাশি বিদেশিদের কাছেও বার্তা যাবে বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রয়েছে। আরও শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে। এছাড়া কারাবন্দি নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তাসহ নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের।

বুধবার তারেক রহমান ভাইস চেয়ারম্যান, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ও ঢাকা মহানগর নেতাদের সঙ্গে পৃথক ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। এর আগে মঙ্গলবার স্থায়ী কমিটি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গেও পৃথক ভার্চুয়াল বৈঠক করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

 

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার থেকে দুই দিন কর্মসূচি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যা বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষ্যে দুই দিনের কর্মসূচির বিষয়ে স্থায়ী কমিটির নেতারা বলেন, কর্মসূচিই হতে পারে স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরুর প্রথম ধাপ। তারা মনে করেন, এর মাধ্যমে সারা দেশে নেতাকর্মীরা স্বাভাবিক কার্যক্রম করার সুযোগ পাবে। ফলে এ দিনের কর্মসূচি ভালোভাবে পালন করার সিদ্ধান্ত হয়। দলের নেতারা মনে করছেন, জিয়ার জন্মদিনের কর্মসূচির মাধ্যমে বিপর্যস্ত রাজনৈতিক অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে পাবে বিএনপি।

 

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পর্যায়ক্রমে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন সিনিয়র নেতা বলেন, স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়ে দলের ভেতর আলোচনা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয় এবং নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় খোলা হয়েছে। আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। আদালত থেকে নেতাকর্মীরাও জামিন পেতে শুরু করেছে।

আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি হাইকমান্ড কারাবন্দি নেতাকর্মীদের জামিনে মুক্ত করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বলেছেন।