আল্লাহ, তুমি সবকিছুর বিনিময়ে ছেলেকে ফিরিয়ে দাও


দৈনিক আলোড়ন
আল্লাহ, তুমি সবকিছুর বিনিময়ে ছেলেকে ফিরিয়ে দাও

মা রিনা বেগমের জ্ঞান ফেরার কয়েক ঘণ্টা পরে ছেলে জুয়েলের জ্ঞান ফেরে। রিনা বলেন, ‘প্রাণ খুলে আল্লাহকে ডেকেছি। বলেছি- আল্লাহ, তুমি আমার সবকিছুর বিনিময়ে ছেলেকে ফিরিয়ে দাও। বাবা মরা ছেলেটা একটু সুস্থ করে দাও। এর কিছুক্ষণ পরে দেখি আমার ছেলের জ্ঞান ফিরেছে। আল্লাহর কাছে লাখো কোটি শুকরিয়া।’

আজ রোববার মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদেপড়া বাসের যাত্রী রিনা বেগম এভাবেই ঘটনার বর্ণনা দেন। তিনি খুলনার খালিসপুর শহরের মৃত ইলিয়াস প্যাদার স্ত্রী। ঢাকার কেরানীগঞ্জ কলম ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। তার সঙ্গে ছিল ছেলে জুয়েল (১৫)।

রিনা বেগম বলেন”হঠাৎ সামনের সিটে ধাক্কা লাগে। আমি আর আমার ছেলে নিচে পড়ে যাই। তারপরে কী যে ঘটতেছে বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মাথায় আঘাত লেগে রক্ত ঝরছে। সারা গাড়িতে ভয়ানক চিৎকারের শব্দ। আমার সামনের সিটে যে ছিল, সে মারা গেছে। চোখের সামনে মরণ দেখে এসেছি। হায়াত ছিল তাই বেঁচে গেছি।”

জুয়েল বলেন, ‘আমরা বাসের পিছনের সিটে বসা ছিলাম। এ দুর্ঘটনার কথা মুখে বলে বোঝানো যাবে না। ভাবছিলাম আমার আর মা বলে ডাকার কেউ থাকবে না। পরে আমাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও পুলিশেরা।’

তারা জানান, দুদিন আগে পারিবারিক জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে গ্রামের বাড়ি খুলনার খালিসপুরে যান। আজ ঢাকায় ফেরার পথে এ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।

রোববার সকালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস মাদারীপুরের শিবচরের পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের কুতুবপুর এলাকায় এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এসময় দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি। এ দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২০ জনে দাঁড়িয়েছে।