কুমিল্লায় পণ দিয়েও মুক্তি মেলেনি শি’শু তানিশার, ‘লা’শ’ নিয়ে বিক্ষোভ


দৈনিক আলোড়ন
কুমিল্লায় পণ দিয়েও মুক্তি মেলেনি শি’শু তানিশার, ‘লা’শ’ নিয়ে বিক্ষোভ

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় অপহরণের ১২ ঘণ্টা পর তানিশা আক্তার (৬) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত শনিবার রাত ৩টায় উপজেলা সদর উত্তর ইউনিয়নের কান্দারগাঁও গ্রামের ভুট্টাক্ষেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।

তানিশা কান্দারগাঁও গ্রামের রাসেল মিয়া ও শারমীন আক্তারের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেণিতে পড়ত। আটক চারজন হলো– একই এলাকার মাহফুজ, আশিক, লিটন ও রতন। তাদের বিচার দাবিতে লাশ নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান করেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

তানিশার চাচা মো. ফয়সাল জানান, শনিবার বিকেলে অপরিচিত নম্বর থেকে তাঁর মোবাইল ফোনে কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে ‘আপনার ভাতিজি কোথায়’ বলে জানতে চান এক ব্যক্তি। ‘ভাতিজি বাড়িতে আছে’ জানালে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘সে বাড়িতে নেই, আমাদের কাছে আছে। তাকে পেতে হলে দুই লাখ টাকা লাগবে।’ পরে বিষয়টি তানিশার মা শারমীন ও স্থানীয় মেম্বার শাহজাহান মিয়াকে জানান ফয়সাল। পরে বিকাশের মাধ্যমে অপহরণকারীদের কাছে ২৫ হাজার টাকা পাঠান শারমীন। কিন্তু টাকা পেয়েও তানিশাকে ছাড়েনি অপহরণকারীরা। শাজাহান মিয়া জানান, উপায় না পেয়ে তাঁরা বিষয়টি থানা পুলিশকে জানান।

পরে মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে একই গ্রামের মাহফুজকে (২৫) আটক করে পুলিশ। এর পর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরিবারের সদস্য, এলাকাবাসী ও পুলিশ খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে রাত ৩টায় তানিশাদের বাড়ির পাশের ভুট্টাক্ষেত থেকে লাশ উদ্ধার করেন। পরে একই গ্রামের আশিক, লিটন ও রতনকে আটক করে পুলিশ।

মেয়েকে হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মূর্ছা যাচ্ছেন শারমীন আক্তার। তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে প্রতিদিন পাশের বাড়ির একজনের কাছে প্রাইভেট পড়তে যেত। শনিবার বিকেল ৩টার দিকেও প্রাইভেট পড়তে বের হয়। পরে খবর পান তানিশাকে অপহরণ করা হয়েছে। মেয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেন তিনি।

গতকাল বিকেলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্তের পর স্বজনের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। দাউদকান্দি মডেল থানার সামনে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন স্বজন ও এলাকাবাসী। পরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিশ্বরোড এলাকায় আধা ঘণ্টা অবস্থান করেন। সেখানে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিনুল হাসান, মেয়র নাইম ইউসুফ সেইন ও থানার ওসি মোহাম্মদ আলমগীর ভুঞা। তাঁরা হত্যাকারীদের শাস্তির বিষয়ে আশ্বস্ত করলে বিক্ষোভকারীরা মহাসড়ক থেকে সরে যান।

ওসি মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, তানিশার মা শারমীন আক্তার বাদী হয়ে দাউদকান্দি মডেল থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় আটক চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।