সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে করা মামলায় চার মাস কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেলেন রাজবাড়ী মহিলা দলের সদস্য ও রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া আক্তার স্মৃতি (৩৫)।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজবাড়ী জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি। এ সময় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় জেলা বিএনপি, রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাবসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
সোনিয়া আক্তার স্মৃতির কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন রাজবাড়ী জেলা বার ও স্মৃতির মনোনীত আইনজীবী অ্যাডভোকেট নেকবর হোসেন মনি।
সোনিয়া আক্তার স্মৃতি রাজবাড়ী পৌরসভার ৩নং বেড়াডাঙ্গা এলাকার প্রবাসী মো. খোকনের স্ত্রী। তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্স ক্লাব’ নামে একটি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও রাজবাড়ী মহিলা দলের সদস্য।
মামলার বাদী আরিফিন চৌধুরী রাজবাড়ী জেলা বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সদস্যসচিব এবং মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির অভিযোগে ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সোনিয়া আক্তার স্মৃতিকে নিজ বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। পর দিন ৫ অক্টোবর স্মৃতির বিরুদ্ধে মামলা করেন আরিফিন চৌধুরী।
ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। পরে রাজবাড়ী শিশু পার্কে ফুচকা উৎসবের নামে অশ্লীল নৃত্যের আয়োজন করার অভিযোগে করা মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করলে আদালত তা গ্রহণ করেন।
প্রসঙ্গত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সোনিয়া আক্তার স্মৃতিকে নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে সদর থানা পুলিশ।
পর দিন ৫ অক্টোবর তাকে আদালতে পাঠানো হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ১০ অক্টোবর রাজবাড়ীর ১ নম্বর আমলি আদালতে স্মৃতির জামিনের আবেদন করা হয়। বিচারক কায়ছুন নাহার সুরমা জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন।
২৬ অক্টোবর দুপুরে পুনরায় স্মৃতির আইনজীবী তার জামিন আবেদন করলে রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুহুল আমীন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আবারও তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপর ৩১ অক্টোবর স্মৃতিকে জামিন দেন হাইকোর্ট।
পরে এই জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের বিষয়টি আমলে নিয়ে স্মৃতিকে আবার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি শুনানিতে আপিল বিভাগ স্মৃতির হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন।