রমজানে কোন দেশে কতো ঘণ্টা থাকতে হবে রোজা


দৈনিক আলোড়ন
রমজানে কোন দেশে কতো ঘণ্টা থাকতে হবে রোজা

আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। রমজানের চাঁদ ওঠার সঙ্গেই শুরু হবে সিয়াম সাধনা। মহান আল্লাহর নির্দেশে সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থাকে বিরত থাকে মুসলমানরা। এই মহিমান্বিত মাসেই সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে পবিত্র কুরআন নাজিল হয়েছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, এই বছরে মুসলমান তীর্থভূমি মক্কায় রমজান মাস শুরু হবে আগামী বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ২৩ তারিখ। তবে, তা নির্ভর করছে চাঁদ দেখার ওপর।

সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে আছেন মুসলিম ধর্মালম্বীরা। এই মাসে কোন অঞ্চলের মুসলমানরা কয় ঘণ্টা করে রোজা রাখবে তার একটি চিত্র প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা। কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যমটি বলছে, চলতি রমজানে আইসল্যান্ড বা গ্রিনল্যান্ডের মতো উত্তরের দেশগুলোতে থাকা মুসলমানরা ১৭ ঘণ্টারও বেশি সময় রোজা রাখবেন। আর সবচেয়ে কম সময় রোজা রাখবে চিলি বা নিউজিল্যান্ডের মতো দক্ষিণের দেশগুলোতে বসবাসকারী মুসলমানরা।

উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে বসবাসকারী মুসলমানদের পানাহার থেকে বিরত থাকার সময় আগের থেকে কিছুটা কমবে। ২০৩১ সাল পর্যন্ত এ সময় কমতে থাকবে। তবে, উল্টোটা হবে নিরক্ষরেখার দক্ষিণে বসবাসকারী মুসলমানদের ক্ষেত্রে। ওই অঞ্চলের মানুষদের পানাহার থেকে বিরত থাকার সময় আগের থেকে বাড়বে।

এদিকে, ২০ এপ্রিল থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত সূর্য অস্ত যাবে না নরওয়ের লংইয়ারবাইনসহ বিশ্বের সবচেয়ে উত্তরের শহরগুলোতে। ওই দিনগুলোতে এসব শহরের মুসলমানরা মক্কার সময় অনুযায়ী রোজা রাখবেন।

আল-জাজিরা বলছে, চলতি বছরের রমজান মাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে রোজা রাখবেন গ্রিনল্যান্ডের নুক শহরের মুসলমানরা। ২০ এপ্রিল তাদের পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে ১৮ ঘণ্টা ১২ মিনিট। একই দিনে আইসল্যান্ডের রেইকজাভিকের মুসলমান বাসিন্দারা রোজা ভাঙবেন ১৮ ঘণ্টা ১২ মিনিটে। ২০ এপ্রিল ফিনল্যান্ডের হেলনিস্কি শহরের বাসিন্দারা ১৭ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট রোজা রাখবেন। আর সুইডেনের স্টকহোমের মুসলমানরা ১৭ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট রোজা রাখবেন। গ্লাসগোর স্টকল্যান্ড শহরের বাসিন্দারা ১৭ ঘণ্টা ২১ মিনিট পানাহার থেকে বিরত থাকবেন।

আল-জাজিরার তথ্যানুযায়ী, নেদারল্যান্ডের আর্মাস্টাডাম, পোল্যান্ডের ওয়ারশা, যুক্তরাজ্যের লন্ডন, কাজাকিস্তানের আস্তানা ও বেলজিয়ামের বেলারুশ শহরের বাসিন্দার ১৬ ঘণ্টা করে রোজা রাখবেন। আর ১৫ ঘণ্টা করে পানাহার থেকে বিরত থাকবেন আট শহরের বাসিন্দারা, সেগুলো হলো–ফ্রান্সের প্যারিস, সুইজারল্যান্ডের জুরিখ, রোমানিয়ার বুচারেস্ট, কানাডার অটোয়া, বুলগেরিয়ার সোফিয়া, ইতালির রোম, স্পেনের মাদ্রিদ ও বসনিয়ার সারাজেবো।

পর্তুগালের লিবসন, গ্রিসের এথেন্স, চীনের বেইজিং, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি, তুরস্কের আঙ্কারা, উত্তর কোরিয়ার পিয়ংইয়ং, মস্কোর রাবাট, জাপানোর টোকিও, পাকিস্তানের ইসলামাবাদ, আফগানিস্তানের কাবুল, ইরানের তেহেরান, ইরাকের বাগদাদ, লেবাননের বৈরুত, সিরিয়ার দামেস্ক, মিশরের কয়রো, জেরুজালেম, কুয়েত সিটি, ফিলিস্তিনের গাজা শহর, ভারতের নয়া দিল্লি, হংকং, বাংলাদেশের ঢাকা, ওমানের মাস্কাট, সৌদি আরবের রিয়াদ, কাতারের দোহা, আরব আমিরাতের দুবাই, ইয়েমেনের এডেন শহরের বাসিন্দানের রোজা পালন করতে হবে ১৪ ঘণ্টা।

এদিকে, সবচেয়ে কম সময় রোজা রাখবেন নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের বাসিন্দারা। আগামী ২০ তারিখে ১২ ঘণ্টা ১৭ মিনিট রোজা ভাঙবে শহরটির মুসলামনেরা। এরপরেই রয়েছে চিলির মন্ট পোর্টের শহর। ওই দিনে ১২ ঘণ্টা ১৮ মিনিট পানাহার থেকে বিরত থাকবেন শহরটি মুসলমানরা।

একইদিনে ১২ ঘণ্টা ২৬ মিনিট রোজা রাখবেন উরুগুয়ের মনেতভিডিও শহরের বাসিন্দারা। অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা শহরের বাসিন্দারা ১২ ঘণ্টা ২৭ মিনিট রোজা রাখবেন।