চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকার সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে উড়ে আসা লোহার আঘাতে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, ঘটনাস্থল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে লোহার পাতের আঘাতে মারা গেছেন সালাউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি। তিনি দুর্ঘটনাকবলিত কারখানা থেকে অন্তত আধা কিলোমিটার দূরে সালেহ আহমদ ঝুট মিলের ভেতর অবস্থিত ডিপোতে কাজ করছিলেন।
শনিবার বিকাল ৪টার দিকে সীতাকুণ্ডের ‘সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের’ প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই প্ল্যান্টের অবস্থান উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের কদমরসুল এলাকায়। সেখান থেকে সালেহ কার্পেট কারখানা প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে। অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় সালাহউদ্দিনকে নিয়ে এখন পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, সালেহ কার্পেট নামের একটি কারখানার সামনের খোলা জায়গায় ছিলেন মো. সালাহউদ্দিন। এ সময় কাছেই শোনা যায় বিস্ফোরণের শব্দ। হঠাৎ একটি লোহার পাত উড়ে এসে সালাহউদ্দিনের শরীরে আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। তাকে আর বাঁচানো যায়নি।
এদিকে, বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি লোহার পাত আধা কিলোমিটার উড়ে গিয়ে শামসুল আলম (৬২) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে পাত উড়ে গিয়ে মোট দুজনের মৃত্যু হলো।
বয়োজ্যেষ্ঠ এ ব্যক্তির প্রাণহানির কারণ হওয়ার পাশাপাশি প্ল্যান্টের বিকট বিস্ফোরণে অনেকের দেহের বিভিন্ন অংশ উড়ে যেতে দেখেছেন স্থানীয়রা। ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরের বাড়ি-ঘরও কেঁপে ওঠে; ভেঙে পড়ে জানালার কাঁচ বলে জানিয়েছেন তারা।
শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার কদমরসুল ইউনিয়নের ছোট কুমিরা এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্লান্টে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে। একটি সিলিন্ডারে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে যায়। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট রাত সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের মধ্যে ৯ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। আহতরা হচ্ছেন-নূর হোসেন (৩০), মো. আরাফাত (২২), মোতালেব (৫২), ফেনসি (৩০), জসিম উদ্দিন (৪৫), নারায়ণ (৬০), ফোরকান (৩৫), শাহরিয়ার (২৬) এবং জাহিদ হাসান (২৬)। আহত ১৮ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের অনেকের হাত-পা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আহতদেরকে চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আহত এবং নিহতদের নিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স আসতে শুরু করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। খবর পেয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে উৎসুক মানুষের ভিড় যেমন বাড়তে থাকে, তেমনি উপস্থিত হয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।
এ সময় আহত এবং নিহত স্বজনদের আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। ক্ষত-বিক্ষত শরীরের লাশগুলো আনা হয় প্যাকেটে ভর্তি করে। এছাড়া গুরুতর আহতদের ট্রলিতে করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে। যাদের মধ্যে কারও চোখ, কারও মাথায়, কেউ আবার হাত-পায়ে গুরুতর আহত হয়।